ইসলামে অমুসলিমদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে,যাওয়া নিষেধ

ইসলামে অমুসলিমদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে, বিশেষ করে যারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যদের উপাসনা করে, তাতে সরাসরি অংশগ্রহণ করা বা সমর্থন করা অনুমোদিত নয়। কারণ, ইসলামের মূল শিক্ষা তাওহিদ (এক আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস) এবং শিরক (আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে অংশীদার করা) থেকে দূরে থাকার উপর গুরুত্বারোপ করে।

ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি:

ইসলাম অমুসলিমদের সাথে সহাবস্থান এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের অনুমতি দেয়, তবে অমুসলিমদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করে, বিশেষত যদি তা তাওহিদের বিরোধী হয়।

রেফারেন্স:

১. তাওহিদ এবং শিরক থেকে বিরত থাকার নির্দেশ:

কুরআনে আল্লাহ স্পষ্টভাবে বলেছেন:

আরবি:
وَمَن يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدِ افْتَرَىٰ إِثْمًا عَظِيمًا

উচ্চারণ:
Wa man yushrik billahi faqad iftara ithman ‘azima

বাংলা অনুবাদ:
“যে আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার করে, সে অবশ্যই একটি গুরুতর পাপ করেছে।”
— (সূরা আন-নিসা, ৪:৪৮)

এই আয়াতটি ইসলামের মূল বিশ্বাস তাওহিদের গুরুত্ব তুলে ধরে এবং শিরক থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দেয়।

২. অমুসলিমদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকা:

ইসলামের দৃষ্টিতে এমন আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা, যা আল্লাহর একত্বের সাথে বিরোধপূর্ণ, যেমন মূর্তিপূজা বা অন্য যে কোনো শিরকি কাজ, অনুমোদিত নয়। কুরআনে বলা হয়েছে:

আরবি:
وَٱلَّذِينَ لَا يَشْهَدُونَ ٱلزُّورَ وَإِذَا مَرُّوا۟ بِٱللَّغْوِ مَرُّوا۟ كِرَامًۭا

উচ্চারণ:
Walladhina la yashhadoona az-zoora wa-itha marroo bil-laghwi marroo kirama

বাংলা অনুবাদ:
“এবং যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং যখন তারা অসার বা নিষিদ্ধ কিছু দেখে, তারা সম্মানের সাথে তা এড়িয়ে চলে।”
— (সূরা আল-ফুরকান, ২৫:৭২)

এই আয়াতে “মিথ্যা সাক্ষ্য” বলতে শিরক বা মিথ্যা উপাসনার স্থান বা আচার-অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা বোঝায়। এটি মুসলমানদেরকে এমন স্থান বা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেয়, যেখানে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো উপাসনা করা হয়।

আরও পড়ুন: নামাজ

৩. অন্য ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানে সরাসরি অংশগ্রহণ সম্পর্কে সতর্কতা:

নবী মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন:

আরবি:
مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ

উচ্চারণ:
Man tashabbaha biqawmin fahuwa minhum

বাংলা অনুবাদ:
“যে ব্যক্তি কোনো জাতির (ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক) অনুকরণ করে, সে তাদের মধ্যেই গণ্য হবে।”
— (আবু দাউদ: ৪০৩১)

এই হাদিসটি ইঙ্গিত করে যে, যদি কোনো মুসলমান অন্য ধর্মের আচার-অনুষ্ঠান বা সংস্কৃতির সাথে জড়িয়ে পড়ে, তবে সে তাদের মতো হয়ে যাবে। এর মাধ্যমে মুসলমানদেরকে অমুসলিমদের বিশেষ আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা থেকে সতর্ক করা হয়েছে।

উপসংহার:

ইসলাম শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সকল মানুষের সাথে সদাচরণ করার নির্দেশ দেয়, তবে ধর্মীয় বিশ্বাসে আপস করা বা তাওহিদের সঙ্গে বিরোধী কোনো আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা অনুমোদিত নয়। হিন্দুদের পূজা বা যে কোনো মূর্তিপূজা ভিত্তিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ইসলামে শিরক হিসেবে বিবেচিত হবে, যা গুরুতর পাপ।

আরও পড়ুন

মুহাম্মদ (সা.) মৃত্যুর আগের নসিহতগুলি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *