সালাতুল হাজত নামাযের দুআ ও নিয়ম

সালাতুল হাজত নামাযের দুআ ও নিয়ম>৪৬৯. হজরত আবদুল্লাহ বিন আবু আউফা রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- যদি আল্লাহর কাছে বা কোন বান্দার কাছে কারো. কোন প্রয়োজন দেখা দেয়, তাহলে সে যেন ভালো ভাবে অজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে। আল্লাহর প্রশংসা, গুণকীর্তন করে। নবির ওপর দরুদ পড়ে, এরপর এ দুআ পড়ে-

لا إِلَهَ إِلَّا اللهُ الحَلِيمُ الْكَرِيمُ، سُبْحَانَ اللهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ، وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ، وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرَّ، وَالسَّلَامَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ، لَا تدَعْ لِي ذَنْبًا إِلَّا غَفَرْتَهُ، وَلَا هَمَّا إِلَّا فَرَّجْتَهُ، وَلَا حَاجَةٌ هِيَ لَكَ رِضًا إِلَّا قَضَيْتَهَا، يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ.

উচ্চারণ : লাইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম, সুবহানাল্লাহি রাব্বিল আরশিল আজিম। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামিন। আসআলুকা মুজিবাতি রাহমাতিকা ওয়াআজা ঈমা মাগফিরাতিক, ওয়াল গানিমাতা মিন কুল্লি বিররিন, ওয়াস সালামাতা মিন কুল্লি ইসমিন। লা তা’দা লি জাম্মান ইহু গাফারতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফাররাজতাহু ওয়া হাজাতান হিয়া লাকা রিদান ইল্লা কাদাইতাহা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

অর্থ : আল্লাহ তাআলা ব্যতীত কোন সত্য মাবুদ নেই, যিনি অতি মহান অত্যন্ত সহনশীল। মহান আরশের অধিপতির পবিত্রতা ঘোষণা করছি। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর নিমিত্ত। হে আল্লাহ! আপনার রহমতের হেতুসমূহ, আপনার ক্ষমার সঙ্কল্প, সকল পুণ্যের সুযোগ, সবধরনের পাপ থেকে মুক্তি কামনা করি। আমার সকল অপরাধ মাফ করে দিন, সকল দুশ্চিন্তা লাঘব করে দিন এবং সে সকল প্রযোজন, যাতে আপনার সন্তুষ্টি নিহিত, আপনি তা পূরণ করে দিন হে সর্বোচ্চ দয়ালু। -ইমাম হাকেম বলেন, হাদিসটি সহিহ মুসলিমের শর্ত-মাফিক সহিহ। ইমাম তিরমিজি রহ বলেন, সনদে সমস্যা আছে।৫০৩

ইমাম নববি রহ. বলেন, বিপদাপদের দুআটিও পড়বে-

اللهم آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَ فِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ  النَّارِ.

অজু করে দুই রাকাত নামাজ পড়ে। আল্লাহর প্রশংসা, গুণকীর্তন করে। নবির ওপর দরুদ পড়ে, এরপর এ দুআ পড়ে-

لا إِلَهَ إِلَّا اللهُ الحَلِيمُ الْكَرِيمُ، سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الحَمْدُ لِلهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ، أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ، وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ، وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلَّ بِرَّ ، وَالسَّلَامَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ، لَا تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلَّا غَفَرْتَهُ، وَلَا هَمَّا إِلَّا فَرَّجْتَهُ، وَلَا حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلَّا قَضَيْتَهَا، يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ.

উচ্চারণ : লাইলাহা ইল্লাল্লাহুল হালিমুল কারিম, সুবহানাল্লাহি রাব্বিল আরশিল আজিম। আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আরশিল আজিম। আসআলুকা মুজিবাতি রাহমাতিকা, ওয়া আজা ঈমা মাগফিরাতিকা, ওয়াল গানিমাতা মিন কুল্লি বিররিন ওয়াস সালামাতা মিন কুল্লি ইসমিন। লা তাদা লি জাম্মান ইল্লা গাফারতাহু ওয়ালা হাম্মান ইল্লা ফাররাজতাহু ওয়া হাজাতান হিয়া লাকা রিদান ইল্লা কাদাইতাহা ইয়া আরহামার রাহিমিন।

অর্থ : আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, যিনি অতি মহান অত্যন্ত সহনশীল। মহান আরশের অধিপতির পবিত্রতা ঘোষণা করছি। সমস্ত প্রশংসা বিশ্বপালক আল্লাহর নিমিত্ত। হে আল্লাহ! আপনার রহমতের হেতুসমূহ, আপনার ক্ষমার সঙ্কল্প, সকল পুণ্যের সুযোগ, সবধরনের পাপ থেকে মুক্তি কামনা করি। আমার সকল অপরাধ মাফ করে দিন, সকল দুশ্চিন্তা লাঘব করে দিন এবং সে সকল প্রযোজন, যাতে আপনার সন্তুষ্টি নিহিত, আপনি তা পূরণ করে দিন হে সর্বোচ্চ দয়ালু। -ইমাম হাকেম বলেন, হাদিসটি সহিহ মুসলিমের শর্ত-মাফিক সহিহ। ইমাম তিরমিজি রহ বলেন, সনদে সমস্যা আছে। ইমাম নববি রহ. বলেন, বিপদাপদের দুআটিও পড়বে-

اللهم آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَ فِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النار.

সুনানে তিরমিজিতে আছে- রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের থেকে কিছু হাদিস সালাতুত তাসবিহ সম্পর্কে এসেছে। সেগুলোর বেশির ভাগই সহিহ নয়। ইমাম তিরমিজি বলেন, আবদুল্লাহ বিন মুবারক ও অনেক উলামায়ে কেরাম সালাতুত তাসবিহের কথা বলেন। তারা এ নামাজের অনেক ফজিলতের কথাও বলেন। ৫০৪

৬৫৪. ইমাম তিরমিজি রহ. আবু ওয়াহবের সূত্রে আবদুল্লাহ বিন মুবারক থেকে বর্ণনা করেন যে, তাকে এই নামাজ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন- তাকবিরে তাহরিমা বলার পর পড়বে- 

سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ، وَتَبَارَكَ اسْمُكَ، وَتَعَالَى جَدُّكَ، وَلَا إِلَهَ غَيْرُك

উচ্চারণ : সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়া তাবারাকাসমুকা ওয়া তাআলা ওয়া লা ইলাহা গাইরুক।

অর্থ: হে আল্লাহ। আপনার পবিত্রতার গুণগান করি, আপনার নাম বরকতময় এবং আপনার বড়ত্ব সুউচ্চ। আর আপনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই। এরপর পনেরো বার এই তাসবিহটি পড়বে-

৫০৪, সুনানে তিরমিজি: ২/২০৫

سُبْحَانَ اللهِ ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَلَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ، وَاللهُ أَكْبَرُ

উচ্চারণ: সুবহানাল্লাহ ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়ালা ইলাহা ইল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার।

অর্থ: আল্লাহ তাআলা পবিত্র সত্তা। যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই। তিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি মহান।

এরপর আউজুবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ বলে সুরা ফাতিহা পড়বে ও অন্য সুরা মিলাবে। তারপর উক্ত তাসবিহ দশবার পড়বে। কুকুতে গিয়ে সে তাসবিহ দশবার পড়বে। রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে দাঁড়িয়ে দশবার পড়বে। এরপর সিজদায় দশবার পড়বে। দুই সিজদার মাঝে দশবার পড়বে। দ্বিতীয় সিজদায় দশবার পড়বে। এভাবে চার রাকাত নামাজ পড়বে। ফলে প্রতি রাকাতে ৭৫ বার তাসবিহ পড়া হবে। ১৫ তাসবিহের মাধ্যমে শুরু করবে, কিরাতের পর আবার দশবার পড়বে। রাতে নামাজ পড়লে দুই রাকাতের পর সালাম ফেরানো আমি উম মনে করি। আর দিনে পড়লে সালাম ফেরাতেও পারে আবার নাও ফিরাতে পারে।

আবদুল্লাহ বিন মুবারক থেকে অপর বর্ণনায় আছে- রুকুতে গিয়ে প্রথমে কুকুর তাসবিহ পড়বে এবং সিজদাতেও প্রথমে সিজদার তাসবিহ পড়বে। এরপর উক্ত তাসবিহ পড়বে। আবদুল্লাহ বিন মুবারককে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল- যদি এই নামাজে ভুল হয়, তবে কি সিজদায়ে সাহুতে দশ দশবার করে তাসবিহ পড়বে? তিনি বলেন, না। বরং এই নামাজটি হল, ৩০০ তাসবিহের।

৪৭১. হজরত আবু রাফে রাযি. থেকে বর্ণিত, নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আব্বাসকে বলেছেন- হে চাচা, আমি কি আপনার সাঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করব না, আপনাকে উপহার দেব না, আপনার উপকার করব না? তিনি বললেন, অবশ্যই। তখন নবীজি সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে চাচা, আপনি চার রাকাত নামাজ পড়ুন। প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতেহা ও অন্য আরেকটি সুরা পড়বেন। কিরাত শেষে রুকুর আগে এ দুআটি পনের বার পড়বেন-

اللهُ أَكْبَرُ، وَالْحَمْدُ لِلَّهِ، وَسُبْحَانَ اللهِ،

উচ্চারণ: আল্লাহু আকবার, ওয়াল হামদুলিল্লাহ, ওয়া সুবহানাল্লাহ।

অর্থ : আল্লাহ তাআলা মহান, যাবতীয় প্রশংসা তাঁরই। আমি তাঁরই পবিত্রতা বর্ণনা করছি।

এরপর রুকুতে দশবার। রুকু থেকে মাথা উঠিয়ে দশবার। সিজদার দশবার। সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে দশবার। দ্বিতীয় সিজদায়। দশবার। দ্বিতীয় সিজদা থেকে মাথা উঠিয়ে দশবার। প্রতি রাকাতে মোট ৭৫ বার। চার রাকাতে মোট তিনশত বার হবে।

যদি পাপরাশি মরুভূমির বালুকারাশির সমানও হয়, তবুও আল্লাহ তাহালা মাঝ করে দিবেন। চাচা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ, প্রতিদিন কে এই নামাজ পড়তে সক্ষম? নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, প্রতিদিন এই আমল করতে না পারেন তাহলে প্রতি জুমুআর দিন এই আমল যদি করবেন। যদি প্রতি জুমুআরও আমল করতে না পারেন, তাহলে প্রতি মাসে একবার আমল করবেন। তিনি এভাবে তাকে বলতে বলতে শেষে বললেন, যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহালে প্রতিবছর একবার আমল করবেন। ইমাম নববি রহ. বলেন- ইমাম আবু বকর বিন আরাবি রহ, সুনানে ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘তুহফাতুল আহওয়াজি কিভাবে উল্লেখ করেছেন, আবু উক্ত হাদিসটি দুর্বল। হাসানও নয়।সহিহও নয়। 

ইমাম তিরমিজি, মানুষকে সতর্ক করার জন্য এটি উল্লেখ করেছেন। হজরত উকাইলি বহু বলেন, সালাতুত তাসবিহ বিষয়ে কোন প্রমাণযোগ্য হাদিস নেই।

নববি রহু বলেন- ইমাম দারাকুতান রহ. বলেন, সুরাসমূহের ফজিলতের বিষয়ে সবচেয়ে সহিহ হাদিস এসেছে সুরা ইখলাসের ফজিলতের বিষয়ে। আর নামাজের ফজিলাতের বিষয়ে সবচেয়ে সহিহ হাদিস এসেছে সালাতুত তাসবিহের নামাজের বিষয়ে। তবে ইমাম দারাকুতনির বক্তব্য দ্বারা এটি বোঝা যায় না যে, সালাতুত তাসবিহের হাদিস সহিহ। বরং এ কথা বলার যারা তাদের উদ্দেশ্য থাকে প্রাধান্য দেওয়া। যদিও সেই হাদিসটি দুর্বল হয়।

ইমাম নববি রহ. আরো বলেন, আমাদের একদল উলামায়ে কেরাম, সালাতুত তাসবিহের নামাজকে মুসতাহাব বলেছেন। তাদের মাঝে রয়েছেন, আবু মুহাম্মাদ বাগাবি রহ. ও আবুল মাহাসিন রুয়ানি রহ.।

ইমাম ব্রুয়ানি রহ. বলেন, সালাতুত তাসবিহ পড়া চাই। সর্বদায় এটা পড়ার অভ্যাস করা চাই। উদাসীনতা না করা। অনুরূপভাবে আবদুল্লাহ বিন মুবারকসহ অনেকেই এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

ইসলামে মিথ্যা বলা একটি গুরুতর গুনাহ (পাপ)
বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সাহাবাদের তালিকা

One thought on “সালাতুল হাজত নামাযের দুআ ও নিয়ম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *